আজম খানের দ্বিতীয় যুদ্ধ!

আজ থেকে ২০ কিংবা ২৫ বছর পর 'ব্যান্ড মিউজিকের অবস্থা কি হবে, কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে এই গান এটা ভেবে আমি শংকিত।
ব্যান্ড সংগীতের এই রকম উত্তাল একটা সময়ে দুম করে এই কথা যদি কেউ বলে ফেলেন তাহলে যেটা বেমানানই মনে হতে পারে। কিন্তু এই কথা যিনি বললেন, তিনি তো আর হাবিজাবি কেউ নন। বাংলা ব্যান্ড মিউজিকের আদি গুরু আজম খান। নিজের শংকটাকে যুক্তি দিয়ে বোঝালেন তিনি এই ভাবে 'ব্যান্ড মিউজিকটা এখন একদম কমার্শিয়াল হয়ে গেছে। টাকার জন্য গাইড সবাই, আর গানের জগতটাও হয়ে পড়েছে। আরও স্পষ্ট করে বললেন, গুলশান বনানী ধানমন্ডির মতো আলিশান এলাকার ভেতরেই 'ব্যান্ড দলগুলার কার্যক্রম চলছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে 'ব্যান্ড সঙ্গীত গতিহীন হয়ে পড়বে। এই ধারার ফলাফলটাও তিনি চোঁখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন। বাচ্চু, জেমস, হাসানের পর তেমন কোনো প্রতিভা দেখা যাচ্ছে না। এমনকি স্টার তৈরির প্রক্রিয়াও আস্তে আস্তে রুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। 'ব্যান্ড গানকে এসব দুর্বলতার হাত থেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সম্প্রতি তিনি (আজম খান) মগবাজারে (১আগষ্ট) সাস নতুন নতুন দলগুলোর সঙ্গ বৈঠক করেছেন। আর এ বৈঠক থেকেই ঘোষণা করেছেন তার নতুন কার্যক্রম। 'ব্যান্ডের নতুন দলগুলাই - এর প্রধান, এই কার্যক্রমটা হবে তিনভাবে বিভক্ত।
প্রথমতঃ স্টেজ শো'র সময় তিনি নতুন দলগুলাকে সঙ্গে নেবেন যাতে তারা দর্শকদের সঙ্গে পরিচিত হতে পারে।
দ্বিতীয়তঃ নিজের ক্যাসেট বের করার সময় নতুন দলগুলোকও গানে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ করে দেবেন। ওই ক্যাসেট নতুন প্রজন্ম নামে আলাদা একটা গান করার পরিকল্পনা তার আছে বলে জানালেন।
তৃতীয়তঃ নতুন দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে মিউজিক ভিডিও নির্মাণ করবেন, এ ব্যাপারে মিউজিক ভিডিও নির্মাতা, 'গায়ক আগুন' - এর সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তাও সম্পন্ন হয়ে গেছে বলে জানালেন। নিজের সময়ের সঙ্গে এই সময়ের ব্যান্ডের গানের তুলনা করে বললেন 'আমরা যখন গান করতাম তখন গানের যে কোনো ধরনের ত্যাগ স্বীকার করতে আমরা সব সময়ই প্রস্তুত থাকতাম। যেটা এখনকার দলগুলোর মধ্যে দেখা যায়না। গানের প্রতি কমিটমেন্ট ফেরাতেই হবে, আর এটা নতুন ছেলেরাই করতে পারবে।

নতুন প্রজন্ম নিয়ে অবশ্য আজম খান দারুনভাবে আশাবাদী, ভদ্র, শিক্ষিত, মার্জিত এসব লেখাপড়া জানা ছেলেরা গানের ব্যাপারে খুবই সিরিয়াস। আর গানের জন্য তারা ত্যাগ স্বীকার করতেও প্রস্তুত। এসব ছেলেদের প্রয়োজন শুধু একটু গাইড লাইন দেয়া। এই গাইড লাইন দেয়ার কাজটাই তিনি করতে চান।
অনেক পরিবার বেঁচে আছে বাদ্যযন্ত্র তৈরি করে, অনেক তরুণের স্বপ্ন সাধনা গান, গানকেই অনেক ছেলে জীবন-মরণ হিসেবে নিয়েছে, এসব ছেলেদের জন্যে আমি 'ব্যান্ড মিউজিককে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে দিতে চাই, তুলে আনতে চাই, নতুন আজম খান, বাচ্চু, জেমস,হাসান। যাতে আজ থেকে ৫০ কিংবা ১০০ বছর পরও 'ব্যান্ড সঙ্গীত টিকে থাকে। ব্যান্ডের ভবিষ্যত গায়করা যেনো আমাদের কথা শ্রদ্বায় স্মরণ করে।
মহতী উদোগে অবশ্য সাড়া তিনি বেশ ভালই পাচ্ছেন। আইয়ুব বাচ্চু, স্যাটেলাইট চ্যানেল আর ক্যাসেট কোম্পানিগুলোও আগ্রহ প্রকাশ করেছে সহযোগিতা করার জন্য। ইতিমধ্যেই মুক্তিযুদ্ধের পর এই কার্যক্রমকে নিজের জীবনের দ্বিতীয় যুদ্ধ হিসেবে ঘোষণা করেছেন আজম খান। আর প্রয়োজনে একাই অবিচালিতভাবে তা চালিয়ে যাবার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

হাসান আর্কের একক এন্ড মিক্সড এ্যালবাম সমূহ……

বিশ্ব সঙ্গীত দিবসের শুভেচ্ছা বার্তা, (হাসান আর্ক)

কারবালা - হাসান (স্বাধীনতা ব্যান্ড) ২০০২